
শাহাদাত হোসাইন, হাতিয়া প্রতিনিধি-
নিঝুম দ্বীপের দেশ নামে পরিচিত নোয়াখালী জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া। প্রতিদিন নদী পারাপার হয় প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ। এই এলাকার যোগাযোগের জন্য সি-ট্রাক, ট্রলার ও স্পিড বোট থাকলেও ভারী মালামাল ও যোগাযোগের বাহনগুলো পার করতে নেই কোনো ফেরি। দীর্ঘদিন থেকে ফেরি নিয়ে দাবি তুলে আসছিলেন এই জনপদের বাসিন্দারা। ফেরি পেলে বদলে যেতে পারে হাতিয়ার জীবনযাত্রা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।
প্রতি বছর জেলার বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপে অনেকে ছুটে আসেন হরিণের রাজ্য নিঝুম দ্বীপে এছাড়া ও পর্যটন স্পট কাজির বাজার সমুদ্র সৈকত, সূর্যমুখী সমুদ্র সৈকত, নীমতলী সমুদ্র সৈকত, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা পার্ক, কমলার দিঘি, রহমত বাজার সমুদ্র সৈকত, লাল চর সহ আরো মনোমুগ্ধকর জায়গা সমূহ। আবার হাতিয়া থেকে ছুটে যান কর্ম ব্যস্ত জীবন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাণিজ্যের জন্য। ছুটে চলা মানুষগুলোর যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে সি-ট্রাক, ট্রলার ও স্পিড বোট। বার বার সরকারের কাছে আবেদন করো এখনও পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে মেলেনি ফেরি। তাই বর্তমান সরকারের কাছে তাদের দাবি ফেরি ফেলে বদলে যেতে পারে তাদের জীবনযাত্রা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মজিদ জানান, সি-ট্রাক ও ট্রলার থাকলেও সেখানে ভারি মালামাল বহন করা যায় না। যেটুকু মালামাল নেওয়া হয় তার জন্য গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এতে আমাদের জীবন ব্যয় ও বেড়ে যায়।
মিজান নামে আরেকজন বাসিন্দা জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কারণে অনেক সময় আমাদের সি -ট্রাক, ট্রলার বন্ধ থাকে সেই ক্ষেত্রে ফেরি থাকলে হয়ত যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হতো। তাই সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান অতি দ্রুত ফেরি দিয়ে আমাদের হাতিয়াবাসীর উপকার করবে।
ইসমাইল নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, হাতিয়া ব্যবসা- বাণিজ্যের পাশাপাশি এটা একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর এখানে হাজার হাজার পর্যটক ভ্রমণে আসেন। ফেরি চালু হলে পর্যটকরা তাদের নিজস্ব যাতায়াত ব্যবস্থার মাধ্যমে এখানে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবে।
ঢাকা থেকে দ্বীপে ঘুরতে আসা সৈকত নামের এক পর্যটক জানান, নিঝুম দ্বীপের দেশ নামে পরিচিত হাতিয়ায় বিভিন্ন পর্যটন স্থান রয়েছে। আমরা যারা এসব স্থান দেখতে আসি অনেক সময় নিজেদের ব্যক্তিগত যানবাহন থাকলেও সেটি নিয়ে আমরা আসতে পারি না। নদী পথে যাওয়ার জন্য যেই যানবাহনগুলো রয়েছে বিশেষ করে ট্রলার, স্পিড বোট ও সি-ট্রাক রয়েছে। এগুলো আসলে অতটা নিরাপদ নয়। এক্ষেত্রে একটা ফেরি হলে আসলে নিরাপদে ভ্রমণ করা যাবে এবং নিজেদের মতো করে যানবাহন নিয়ে উপভোগ করা যাবে।
তাজুল ইসলাম নামে স্থানীয় একজন ফার্মাসিস্ট জানান, ফেরি ব্যবস্থা চালু হলে স্বাস্থ্য খাতে এখানকার বড় ধরনের একটি পরিবর্তন হতে পারে। বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা ও উন্নত প্রযুক্তিগুলো সরবরাহের ক্ষেত্রে সহজলভ্য হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, এ অঞ্চলের মানুষদের প্রতিদিন ২০ কিলো নদী পথ পার হয়ে জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেতে হয়।
এদের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামালসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য একটি ফেরি প্রয়োজন। সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিলে শিগগিরই ফেরির দেখা পাবে এই অঞ্চলের মানুষ।