
স্টাফ রিপোর্টার
বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দেশের সাধারণ জনগণ মনে প্রাণে চাইতো আওয়ামী দোসরদের বিদায় হোক। প্রত্যাশা ছিল— বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আবারও ক্ষমতায় এসে দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গিয়েছিল, যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে বিএনপি ২৭০টিরও বেশি আসনে জয়লাভ করতে পারে।
কিন্তু ৫ই আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন করে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা। দলের কিছু সংখ্যক নেতার বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জনগণের মনে ভয় সৃষ্টি হয়েছে— আবারও কি আওয়ামী লীগের মতো আরেকটি ক্ষমতাকেন্দ্রিক দল দেশের নেতৃত্বে আসছে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “বিএনপি জনগণের কাছে বিকল্প শক্তি হিসেবে উঠে এসেছিল, কিন্তু এখন দলীয় কিছু নেতার আচরণে সেই আস্থা নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে।” জনগণের মাঝে প্রশ্ন উঠছে— ‘ক্ষমতা পরিবর্তন হবে, কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কৃতি কি বদলাবে?’
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন নিয়ে জনজল্পনা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি দেশে ফেরার উপযুক্ত সময় ও রাজনৈতিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছেন। আইনি কোনো বাধা না থাকলেও নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে তিনি এখনো নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিএনপির ভেতরে শৃঙ্খলা ফিরতে পারে, কারণ তিনি এখনো দলীয় কর্মীদের কাছে আস্থার প্রতীক। তবে দলে অনুপ্রবেশকারী সুযোগসন্ধানী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে দমন না করা গেলে তার ফেরাও তেমন ফলপ্রসূ হবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
নতুন মনোনয়ন তালিকায় আশার আলো
সম্প্রতি ঘোষিত বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় ২৩৭টি আসনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে— তাদের বেশিরভাগই তরুণ ও শিক্ষিত প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারী।
দলীয় সূত্র জানায়, এবার নেতৃত্বে আসছেন নতুন প্রজন্মের এমন সব তরুণ রাজনীতিক, যারা মাঠের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, “বিএনপির এই নতুন মুখগুলো জনগণের মধ্যে নতুন আশা ও আস্থার সঞ্চার করেছে। তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণই হতে পারে দলের ভবিষ্যতের মূল শক্তি।”
তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, শুধু নতুন মুখ আনাই যথেষ্ট নয়— তাদের চারপাশে গড়ে ওঠা পুরনো প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে জনগণের প্রত্যাশা ভেঙে যেতে পারে আগের মতোই।
জনগণের প্রত্যাশা: সুষ্ঠু নির্বাচন ও নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি
বিএনপি জনগণের আস্থার জায়গা পুনর্গঠনের বড় সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু সেই আস্থা ধরে রাখতে হলে দলীয়ভাবে কঠোর শৃঙ্খলা রক্ষা, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি, সুশাসন, স্বচ্ছতা ও তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন— “জনগণ শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন চায় না, তারা চায় সংস্কৃতির পরিবর্তন। আওয়ামী লীগের দমননীতি নয়, বরং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি চায় তারা।”
বাংলাদেশ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে। আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটলেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বিএনপি যদি নিজস্ব ঘর গোছাতে পারে এবং তারেক রহমান দেশে ফিরে কার্যকর নেতৃত্ব দেন, তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।
অন্যথায়, জনগণের মনে আবারও প্রশ্ন উঠবে— “আমরা কি কেবল মুখ বদলেছি, নাকি সত্যিই রাজনীতি বদলাতে পেরেছি?”
Post Views: ১৯
নিউজ ডেস্ক
বিএনপি মহাসচিব: নির্বাচনের দিন ছাড়া গণভোট গ্রহণযোগ্য নয়
গণভোট ইস্যুতে ফেসবুকে ‘হ্যাঁ-না’ বিতর্কে মুখর রাজনীতি
শরীয়তপুর জেলার নিহত আবুল কালামের দুই শিশু সন্তানের পড়ালেখার দায়িত্ব নিলেন বিএনপির নেতা
ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে প্রস্তুত, প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও
কাউলতিয়ায় নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন, কৃষকদলের নেতৃত্বে ঐক্যের সংকল্প
নতুন মুখে আশার আলো, আস্থা ফেরাতে চায় বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার
বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দেশের সাধারণ জনগণ মনে প্রাণে চাইতো আওয়ামী দোসরদের বিদায় হোক। প্রত্যাশা ছিল— বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আবারও ক্ষমতায় এসে দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গিয়েছিল, যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে বিএনপি ২৭০টিরও বেশি আসনে জয়লাভ করতে পারে।
কিন্তু ৫ই আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন করে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা। দলের কিছু সংখ্যক নেতার বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জনগণের মনে ভয় সৃষ্টি হয়েছে— আবারও কি আওয়ামী লীগের মতো আরেকটি ক্ষমতাকেন্দ্রিক দল দেশের নেতৃত্বে আসছে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “বিএনপি জনগণের কাছে বিকল্প শক্তি হিসেবে উঠে এসেছিল, কিন্তু এখন দলীয় কিছু নেতার আচরণে সেই আস্থা নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে।” জনগণের মাঝে প্রশ্ন উঠছে— ‘ক্ষমতা পরিবর্তন হবে, কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কৃতি কি বদলাবে?’
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন নিয়ে জনজল্পনা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি দেশে ফেরার উপযুক্ত সময় ও রাজনৈতিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছেন। আইনি কোনো বাধা না থাকলেও নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে তিনি এখনো নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিএনপির ভেতরে শৃঙ্খলা ফিরতে পারে, কারণ তিনি এখনো দলীয় কর্মীদের কাছে আস্থার প্রতীক। তবে দলে অনুপ্রবেশকারী সুযোগসন্ধানী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে দমন না করা গেলে তার ফেরাও তেমন ফলপ্রসূ হবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
নতুন মনোনয়ন তালিকায় আশার আলো
সম্প্রতি ঘোষিত বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় ২৩৭টি আসনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে— তাদের বেশিরভাগই তরুণ ও শিক্ষিত প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারী।
দলীয় সূত্র জানায়, এবার নেতৃত্বে আসছেন নতুন প্রজন্মের এমন সব তরুণ রাজনীতিক, যারা মাঠের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, “বিএনপির এই নতুন মুখগুলো জনগণের মধ্যে নতুন আশা ও আস্থার সঞ্চার করেছে। তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণই হতে পারে দলের ভবিষ্যতের মূল শক্তি।”
তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, শুধু নতুন মুখ আনাই যথেষ্ট নয়— তাদের চারপাশে গড়ে ওঠা পুরনো প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে জনগণের প্রত্যাশা ভেঙে যেতে পারে আগের মতোই।
জনগণের প্রত্যাশা: সুষ্ঠু নির্বাচন ও নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি
বিএনপি জনগণের আস্থার জায়গা পুনর্গঠনের বড় সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু সেই আস্থা ধরে রাখতে হলে দলীয়ভাবে কঠোর শৃঙ্খলা রক্ষা, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি, সুশাসন, স্বচ্ছতা ও তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন— “জনগণ শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন চায় না, তারা চায় সংস্কৃতির পরিবর্তন। আওয়ামী লীগের দমননীতি নয়, বরং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি চায় তারা।”
বাংলাদেশ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে। আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটলেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বিএনপি যদি নিজস্ব ঘর গোছাতে পারে এবং তারেক রহমান দেশে ফিরে কার্যকর নেতৃত্ব দেন, তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।
অন্যথায়, জনগণের মনে আবারও প্রশ্ন উঠবে— “আমরা কি কেবল মুখ বদলেছি, নাকি সত্যিই রাজনীতি বদলাতে পেরেছি?”
মন্তব্য করুন
শিরোনাম
চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ, হাসপাতালে ভর্তি
নতুন মুখে আশার আলো, আস্থা ফেরাতে চায় বিএনপি
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মুহাম্মাদ ফাউন্ডেশনের সেলাই মেশিন বিতরণ
ইতালিতে জিয়া সাইবার ফোর্স সভাপতি আ. জলিলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার—কেন্দ্রীয় কমিটির তীব্র নিন্দা
গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে নির্বাচন কমিশনে সমমনা আট দলের স্মারকলিপি জমা
বিএনপি মহাসচিব: নির্বাচনের দিন ছাড়া গণভোট গ্রহণযোগ্য নয়