স্বাস্থ্য ডেস্ক ||
হাসের ডিম আমাদের দেশের গ্রামীণ জীবনে বহুদিনের পরিচিত একটি পুষ্টিকর খাদ্য। যদিও মুরগির ডিম বেশি প্রচলিত, তবুও পুষ্টিগুণের দিক থেকে হাসের ডিম কোনো অংশে পিছিয়ে নয়। বরং এতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়, যা শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি মাঝারি আকারের হাসের ডিমে প্রায় ১৩ গ্রাম প্রোটিন, প্রচুর ভিটামিন–বি১২, ভিটামিন–এ, আয়রন, সেলেনিয়াম ও ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এসব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং ত্বক ও চুলের জন্যও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
হাসের ডিমের উপকারিতা:
১. প্রোটিনে ভরপুর: শরীরের কোষ গঠন ও পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
২. হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো: এতে থাকা ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে।
৩. চোখের যত্নে: ভিটামিন–এ ও লুটিন চোখের দৃষ্টি শক্ত রাখতে সাহায্য করে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: সেলেনিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৫. ত্বক ও চুলের যত্নে: ভিটামিন–ই ও প্রোটিন ত্বক ও চুলের গুণগত মান উন্নত করে।
উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য সতর্কতা:
হাসের ডিমে চর্বি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ মুরগির ডিমের তুলনায় কিছুটা বেশি। তাই উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি নিয়মিত বা অধিক পরিমাণে খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল রক্তচাপ বাড়াতে এবং ধমনী সংকোচন ঘটাতে পারে।
পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১–২টি হাসের ডিম খেতে পারেন, সেটিও সেদ্ধ করে খাওয়া উত্তম—তেলে ভাজা নয়।
পরিমিত পরিমাণে খেলে হাসের ডিম একটি পুষ্টিকর ও শক্তিদায়ক খাদ্য, যা শরীরের জন্য নানা উপকার বয়ে আনে। তবে হৃদরোগী ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরি। সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলে এটি হতে পারে সুস্বাস্থ্যের এক অনন্য উৎস।