
ঢাকার মিরপুর রূপনগরের একটি রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনো পুরোপুরি আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কেমিক্যালের জটিলতা থাকায় সম্পূর্ণ নির্বাপণে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। তিনি জানান, “এখনো সেখানে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে, যেগুলোর মিশ্রণে আগুন আবার জ্বলে উঠতে পারে। এ কারণে আমাদের বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের অপেক্ষা
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আরও জানান, “বুধবার সকালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে। তারা পরিবেশ, রাসায়নিকের প্রকৃতি ও আগুনের উৎস বিশ্লেষণ করে সুপারিশ দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এছাড়াও, পুরো রাত ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করবে, যাতে আগুন নতুন করে জ্বলে উঠলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
কেন এত সময় লাগছে?
তিনি বলেন, “এটি সাধারণ আগুন না। কেমিক্যাল অগ্নিকাণ্ডে একটি নির্দিষ্ট প্রটোকল অনুসরণ করতে হয়। আগুন নেভাতে তড়িঘড়ি করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অতীতে টঙ্গীর এক ঘটনায় সাত-আট দিন লেগেছিল আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে। এখানেও তেমনই সময় লাগতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা। আমরা চাই না কোনো বাড়তি ক্ষতি হোক।”
১৬টি মরদেহ উদ্ধার
ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত পোশাক কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে পুড়ে যাওয়া ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো এতটাই পুড়ে গেছে যে, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সতর্ক অবস্থান
মহাপরিচালক বলেন, “বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে, তবে তা সম্পূর্ণ নির্বাপণ বলা যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আগুনের উৎস ও রাসায়নিকের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ না করা হয়, ততক্ষণ আমরা পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। তাই আমাদের ফায়ার ফাইটাররা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।”
রুপনগরে রাসায়নিক গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জটিল রাসায়নিক উপাদান এবং বিস্ফোরণের আশঙ্কার কারণে তা পুরোপুরি নির্বাপণে সময় লাগতে পারে কয়েকদিন। ফায়ার সার্ভিস সতর্কভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, আর বুধবার বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।









