গাজীপুরে নতুন আসন-৬ এক সরকার পরিবারে চার প্রার্থী

সোহেল চৌধুরী রোমান-
গাজীপুর ৬ আসনে প্রচারণার দৌড়ে এগিয়ে যারা,হাসান উদ্দিন সরকার, সালাহ উদ্দিন সরকার, রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, প্রভাষক বসির উদ্দিন,গাজী সালা্হউদ্দিন, সরকার জাভেদ আহমেদ সুমন, মো. আরিফ হোসেন হাওলাদার।

গাজীপুরে এতদিন সংসদীয় আসন ছিল ৫টি। তবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন নতুন একটি আসন (নং-১৯৮) যুক্ত করেছে। শিল্প-শ্রমিক অধ্যুষিত গাজীপুরে ভোটার সংখ্যা ও ভৌগলিক বাস্তবতা বিবেচনায় আত্মপ্রকাশ ঘটেছে গাজীপুর-৬ আসনের।

তবে পূবাইলবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রাম ও আশ্বাস সত্ত্বেও শুধু মাত্র ৩৯ নং ওয়ার্ডকে গাজীপুর ৬ আসনে রেখে বাকী ৪০, ৪১ ও ৪২ নং ওয়ার্ডকে গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনে রাখায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পূবাইল সর্বদলীয় ঐক্য সংগ্রাম পরিষদ একে “সুপরিকল্পিত বঞ্চনা” বলে আখ্যা দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সদ্য প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, গাজীপুর মহানগরীর গাছা, পূবাইলের একটি অংশ এবং টঙ্গী পূর্ব-পশ্চিম থানার কয়েকটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত নতুন আসনে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৪০ হাজার ২৫৪ জন।

গাজীপুর ৬ আসন নিয়ে এখন গাজীপুরবাসীর মনে প্রশ্ন জাগছে—কে হবেন গাজীপুর-৬ এর প্রথম সংসদ সদস্য? এ নিয়ে এখন ভোটারদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। তবে এরই মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে টঙ্গীর সরকার পরিবার। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এক পরিবারের চারজন প্রার্থী মাঠে নামায় পুরো এলাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।টঙ্গীজুড়ে উত্তেজনা, প্রথম এমপি কে— তা নিয়ে ভোটারদের তুমুল আলোচনা সমালোচনা।

প্রবীন নেতা হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য, মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার। তার সমর্থকরা আশাবাদী, গাজীপুর-৬ এর প্রথম এমপি হিসেবে তাকেই দেখতে যাচ্ছে জনগণ।একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন নমিনেশন তো আমি পেয়েই গিয়েছি।

তার ছোট ভাই, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকারও দলের সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে দাবি তার কর্মী-সমর্থকদের। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালীতে ‘ভি’ চিহ্ন প্রদর্শন করে তিনি নিজের প্রস্তুতির জানান দেন।

এছাড়া তাদের চাচাতো ভাই ও বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, যিনি বহিষ্কৃত হলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।প্রচারণায় আছেন টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি’র সভাপতি সরকার জাভেদ আহমেদ সুমন।

এছাড়াও টঙ্গী গাজীপুরের গাজী পরিবারের তরুণ নেতা, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাহ্উদ্দিনও সরব প্রচারণায় নেমেছেন।

রাতে লোকজন নিয়ে ব্যানার ফ্যাস্টুন লাগাতে দেখে কথা বলতে চাইলে এগিয়ে আসেন গাজীপুর মহানগর কৃষক দলের যুগ্ন আহবায়ক মোহাম্মদ আলফাজ দেওয়ান তিনি বলেন, দিন বদলেছে,স্বৈরশাসক,জবরদখলকারী।দিনের ভোট রাতেই শেষ যাই বলি না কেনো,এখন সেই “আমার ভোট আমি দিবো,তোমার ভোটও আমি-ই দিবো”সেই দিন নেই।মানুষ এখন ভীষণভাবে পরিবর্তন চায় এবং তারা যোগ্য এবং পরিষ্কার ইমেজের প্রার্থী চায়।

দুর্নীতির অভিযোগ, পেশী শক্তির মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার,চাঁদাবাজি,মাদক কিংবা সন্ত্রাসী গ্রুপ,বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা নেই,আওয়ামী লীগের সহযোগিসহ এমনসব বিভিন্ন বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিগন এবার এমপি টিকিট পাচ্ছে না বলেই সকলের মুখে শোনা যাচ্ছে।
ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দেবার জন্যে দলগুলোর প্রতি দাবি উঠেছে।
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান চাইছেন জনগণ এর কাছে গ্রহনযোগ্য ইয়াং নতুন মুখ।
এক কথায় ক্লীন ইমেজ ব্যক্তি।ইনশাআল্লাহ আমি মনে করি আমার রাজনৈতিক অভিভাবক আমার নেতা গাজী সালাহ্উদ্দিন ভাই এইদিক দিয়ে গাজীপুর ৬ আসনে যোগ্য প্রার্থী।যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সঠিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে নমিনেশন দেয় তবে ইনশাআল্লাহ্ আমি মনে করি গাজীপুর ৬ আসনের জনগন সত্যিকার অর্থে একজন জনতার সেবক পাবে।

সরকার পরিবারের বাইরেও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের একাধিক তরুণ নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে নেমেছেন। বিশেষ করে প্রভাষক বসির উদ্দিন, আরিফ হোসেন হাওলাদার, জসিম উদ্দিন ভাট ও গাজী সালাহউদ্দিন প্রমুখও এলাকায় গণসংযোগ চালাচ্ছেন।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করলেও কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার পর তারাও কোনো চমক দেখাতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলে ধারণা জোরালো হয়েছে।

সবমিলিয়ে গাজীপুর-৬ আসনে সরকার পরিবারের চার প্রার্থীর সক্রিয় উপস্থিতি নির্বাচনী উত্তেজনা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ভোটারদের প্রত্যাশা—এই আসনেই দেখা যাবে বিএনপির ভেতরের আসল শক্তিমত্তা ও একই পরিবারের ভেতরে নীরব প্রতিযোগিতা।

Facebook
X
WhatsApp

মন্তব্য করুন