আওমী পরিবারের সদস্য হয়েও বহাল তবিওতে!

মো:আলম খন্দকার:

৫ আগস্টের পরই ছাত্রলীগ পরিচয় পাল্টে হয়ে যান জামায়াত! বহাল তবিয়তে আছেন ডাক বিভাগের ডিজি?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মামলা-নির্যাতন করেও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পালন করে চলেছেন এস এম শাহাব উদ্দীন। ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা এবং প্রতিমন্ত্রী পলকের অতি আস্থাভাজন হওয়ায় তাকে সিনিয়রিটি লংঘন করে ৩১ জুলাই ২৪ এই পদে বসানো হয়।যা এখন পর্যন্ত কারো নজরে পড়েনি !অতিরিক্ত মহাপরিচালক থাকাকালে গত ১৭ জুলাই ২০২৪ পোস্টাল একাডেমি, রাজশাহীতে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিতে যান। জানা গেছে,২০ জুলাই ২০২৪ তৎকালীন মহাপরিচালকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেশব্যাপী ছাত্রজনতার লাগাতার অবরোধ আন্দোলন এবং সরকার ঘোষিত কার্ফিউ চলাকালীন পোস্টাল একাডেমি, রাজশাহী থেকে সরকারি পাজেরো স্পোর্টস গাড়িতে ঢাকায় আসার পথে গাজীপুরে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করলে গাড়ি পুড়ে যায়।এ সময় শাহাব উদ্দীনের মুখ গাড়ির ভাঙা কাঁচে কেটে যায়। এ ঘটনায় ২৪ জুলাই গাছা থানায় তিনি তাঁর ড্রাইভার তরিকুল ইসলামকে দিয়ে একটি এজাহার দায়ের করান (এফআইআর নং- ২০, জিআর নং ১৭৬) এবং সেখানে ২০০/২৫০জন আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাকে দূষ্কৃতিকারী আখ্যা দিয়ে আসামি করা হয়,আটজনকে গ্রেফতার করে অমানবিক নির্যাতন করা হয়।জানা গেছে, সে সময়ের ডিজির আদেশ অমান্য করে গাড়ি নিয়ে ঢাকায় আসা এবং ৭২ লক্ষ টাকা মূল্যের গাড়ি পুড়ে গেলেও কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
ছাত্রজনতার বিপ্লবের মধ্যেই ডাক অধিদপ্তরে ২৭ জুলাই ২০২৪ সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, যেখানে পলক তার বহুল আলোচিত বক্তব্যে বলেছিল, “আমি ইন্টারনেট বন্ধ করিনি ,ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে” সেই অনুষ্ঠানেই তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক শাহাব উদ্দিন তাঁর মুখের হালকা কেটে যাওয়া অংশে ব্যান্ডেজ বেঁধে বক্তৃতা দেন এবং জুলাই আন্দোলনকারীদের নাশকতা সৃষ্টকারী, দেশদ্রোহী, দূষ্কৃতিকারী আখ্যা দিয়ে বক্তৃতা দেন।বক্তৃতায় তাদের বিচার ও শাস্তি দাবি করেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে এই অবস্থান নিয়ে তার ভাগ‍্য খুলে যায়, বাদ পড়েন মহাপরিচালক তরুন কান্তি সিকদার , ৩১ জুলাই প্রতিমন্ত্রী পলকের নির্দেশে তৎকালীন এডিজি শাহাব উদ্দীন অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে ডিজির পদে বসেন ।নিজেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছাত্রলীগের সাবেক সমাজ কল্যান সম্পাদক হিসাবে পরিচয় দেওয়া শাহাব উদ্দীন ৫ আগস্টের পর রাতারাতি জামায়াতের লোক বনে যান, কয়েকটি রেফারেন্স ব‍্যবহার করে আরো জাঁকিয়ে বসেন?
নগদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক বাদী হয়ে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন, নগদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুকসহ ২৪জনকে আসামি করে।৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২৪ মতিঝিল থানায় মামলা করে (মামলা নং ০২/২০২৫)। এতে নাম উল্লেখ করে বলা হয়, ১৬জন আসামি ৮জন আসামির সহায়তায় ভার্চুয়াল মুদ্রা এবং ডকুমেন্টস জালিয়াতি করে নগদের গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।এখন পর্যন্ত এ মামলায় কোন ব‍্যবস্থা নেয়া হয়নি। মতিঝিল থানা পুলিশের বা বাংলাদেশ ব‍্যাংকের কোন তৎপরতা নেই!শাহাব উদ্দীন তার নাম বাদ দেয়ার তদবির করছেন, আর নিজের বিলাসবহুল অফিসে বান্ধবীগণের সঙ্গে খোশগল্পে ‘পলক স‍্যারের সাথে কাটানো সুসময়ের স্মৃতি রোমন্থনে সময় পার করছেন।

Facebook
X
WhatsApp

মন্তব্য করুন